@AlimulRazi
আমি একটি কোম্পানির ছোটখাটো ম্যানেজার আর আমার স্ত্রী আমার সেম পজিশনে ছিল কিন্তু এখন সরকারি জব করে ।সকাল বেলায় আমার গিন্নির মেজাজ আর চায়ের পানি এক সংগে ফুটতে থাকে।আজ হঠাৎ বউয়ের আদেশ হলো - মায়িশা (আমার মেয়ের নাম) স্কুল থেকে ডাক এসেছে, তোমাকে যেতেই হবে। অংকের টিচার দেখা করতে চেয়েছেন।
অগত্যা যেতেই হলো।
গিয়ে দেখি, বিশাল একটা হলঘরে অংকের ম্যাডাম চশমা পরে বসে আছেন।
গম্ভীর গলায় ডাকলেন - দিয়ানা। সেই ডাকে দিয়ানা মা উঠে দাঁড়ালেন। চললো দিয়ানা কোন কোন অংক পারেনি তার বিশ্লেষণ। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চললো, বেচারা দিয়ানার মায়ের তীব্র আস্ফালন।
- এতগুলো টাকা খরচ করে মাষ্টার রেখেছি। আজ বাড়ি চল, তোর হাত-পা ভাঙবো!
দিয়ানা মা আর বাড়ি পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন না। তিনি হলের মধ্যেই দিয়ানার চুলের মুঠি ধরে কয়েকটা চড় মেরে বললেন - আজ তোর বাবা বাড়িতে আসুক। দেখবি ফাঁকি মারার কত মজা!
আর অর্পার বাবা - অর্পার তিনটে অংক ভুল করায় তীক্ষ্ণ কন্ঠে বললেন - সামনের তিনদিন অর্পার খাওয়া বন্ধ !!!
এভাবেই কেটে গেল অনেকটা সময়।
অবশেষে ডাক এলো - মায়িশা ইসলাম , মানে আমার মেয়ে, যার জন্য এখানে আমার আসা।
টিচার বলে চললেন - আপনার মেয়ে তো অর্ধেক অংকই পারেনি!
আমি বললাম
- অর্ধেক অংক তো পেরেছে। আর একটু বড় হলে বাকিটা শিখে নেবে। আপনি টেনশন করবেন না, ম্যাডাম।
- আপনি কনফিডেন্ট?
- নিশ্চিত। আসলে কি জানেন ম্যাডাম, আমি আর মায়িশার মা, মাধ্যমিকে দুজনে মিলে অংকে ১০০ তুলতে পারি নি। তবুও আমার ম্যানেজার হওয়া কিংবা মায়িশার মায়ের সরকারী কর্মকর্তা হতে কোন অসুবিধেই হয় নি!
মায়িশা খুশী হয়ে বলল --
- বাবা, আজ বিরিয়ানী খাব।
আমি বললাম - অর্পাকে ও ডাকিস। ওর বাবা ওকে তিন দিন খেতে দেবে না বলেছে !!!!
বাড়তি চাপ দিয়ে ছেলেমেয়েকে টেনশন দেবেন না। টেনশন নেওয়ার জন্য তো সারা জীবনটা পড়ে রইল ওরা যেদিন নিজে বুঝবে ঠিক শুধরে যাবে।
এটাই হওয়া উচিত। সন্তানের উপর জোর খাটানো উচিত নয়।
(সংগৃহীত)