Discover postsExplore captivating content and diverse perspectives on our Discover page. Uncover fresh ideas and engage in meaningful conversations
#ওজন #ভুল #ধারণা
#ওজন কমানো নিয়ে ৫টি প্রচলিত ভুল ধারণা!
আজকাল আমাদের মধ্যে প্রায় সকলেই আস্তে আস্তে স্বাস্থ্যসচেতন হয়ে উঠছে। আর সেই সাথে চলছে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার নানান চেষ্টা। কারণ অতিরিক্ত ওজন বা ওবেসিটি যে হার্ট সমস্যা, ব্লাড সুগার, হাইপারটেনশনসহ নানা সমস্যার মূল কারণ তা আজ কারো অজানা নয়। এ কারণেই আজ অনেকেই ব্যায়াম, ডায়েট কন্ট্রোলসহ নানা নিয়ম পালন করছে। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায় এসব কিছুই কাজে আসছে না।
এর কারণ ওয়েট লস নিয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারণা। ওজন কমানো নিয়ে এ সকল ভ্রান্ত ধারণাগুলো দূর করতে পারলে ওজন কমানোটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
ওজন কমানো নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণাঃ-
১. ব্যায়াম করলেই ওজন কমে, ডায়েটের দরকার নেই-
অনেকে ভাবেন শুধু ব্যায়াম করলেই ওজন কমানো সম্ভব। জিমে গিয়ে ঘাম ঝরালে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের কোন দরকার নেই। খুবই ভুল ধারণা। একটা উদাহরণ দিলেই বুঝতে পারবেন। আপনি হয়তো জিমে এক ঘন্টা ব্যায়াম (নির্ভর করবে কী ধরণের ব্যায়াম করছেন তার উপর) করে ১০০ থেকে ৩০০ ক্যালরি বার্ন করলেন। কিন্তু এক গ্লাস কোল্ড ড্রিঙ্ক বা একটা বার্গার খেলে আপনার শরীরে জমা হবে ১৫০০ থেকে ২০০০ ক্যালরি। অঙ্কটা কী এবার বুঝতে পারছেন? কাজেই শুধু জিমে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘাম ঝরালে কোনো লাভ হবে না। সেই সাথে মেনে চলতে হবে হেলদি ডায়েট।
২. ওয়েট ট্রেনিং করলে ছেলেদের মত পেশীবহুল শরীর হয়-
এটা একটা মস্ত বড় ভুল ধারণা। অনেক মেয়েই জিমে গিয়ে ওয়েট ট্রেনিং এর জন্য না করে দেন এই ভেবে যে, ওয়েট ট্রেনিং করলে চেহারা ও বডি ছেলেদের মত মাসকুলার হয়ে যাবে। কিন্তু ঠিকমত ওয়েট ট্রেনিং করলে কখনই বডি মাসকুলার হবে না। কারণ মেয়েদের মধ্যে পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরনের অভাব। বরং বডি টোনিংয়ের জন্য ওয়েট ট্রেনিং একান্ত জরুরী।
৩. বেশি পানি খেলে শরীর ফুলে যায় এবং মোটা হয়-
বেশি বেশি পানি খেলে শরীর ফুলে যায় এমন ভ্রান্ত ধারনা নিয়ে অনেকেই পানি খাওয়া কমিয়ে দেন। এমনটা করবেন না। বরং শরীরের বিপাক ক্রিয়া ঠিক রাখার জন্য পানি অতি জরুরী। দিনে কমপক্ষে ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানি অবশ্যই খেতে হবে।
৪. কলা খেলে মোটা হয়-
এ কথাটা প্রায়ই শোনা যায়। অন্যান্য সব ফল খেলেও মোটা হবার ভয়ে কলা থেকে অনেকেই শত হাত দূরে থাকেন। কিন্তু কলায় থাকা মিনারেল, পটাশিয়াম আর ভিটামিন আমাদের দেহের জন্য অনেক উপকারী। একটা কলায় থাকে ৮০ থেকে ১২০ ক্যালরি। যেখানে চিপস, ভাজাপোড়া বা এক পিস সন্দেশে অনেক বেশি ক্যালরি থাকে। কাজেই সন্ধ্যাবেলা হঠাৎ ক্ষিদে পেলে এসব অস্বাস্থ্যকর খাবার না খেয়ে একটা কলা খেতে পারেন। পেটও ভরবে, অনেক পুষ্টিও পাবেন।
৫. শুধু মর্নিং ওয়াক করলেই ওজন কমে-
মর্নিং ওয়াক শরীর ও মনের জন্য খুবই ভালো। এটি হার্ট, ব্রেন ভালো রাখে। বয়স্ক মানুষ যাদের জন্য ভারী ব্যায়াম করা সম্ভব নয় তাদের জন্য মর্নিং ওয়াকের মত ভালো কোনও কিছু হতেই পারে না। কিন্তু আপনি যদি ওজন কমাতে চান এবং বডি টোনিং করতে চান তবে শুধু মর্নিং ওয়াকে কোনো কাজ হবে না। এর সাথে যোগ করতে হবে সঠিক ব্যায়াম রুটিন এবং যথাযথ খাদ্যাভ্যাস।
সন্তানকে সবজি খাওয়াতে পারছেন না কিছুতেই?
পরিবারের ছোট সদস্যরা এমনকি পরিণত বয়সের সন্তানকেও সবজি খাওয়াতে বেগ পেতে হয় অনেক মায়ের। খেতে বসে সবজি দেখলে তারা নাক সিটকায়, মুখ বাকায়, জেদ করে। তবে সবজি না খাওয়ালে তো সুষম পুষ্টি মিলবে না। তাই অনাগ্রহী হলেও সন্তানকে সবজি খাওয়াতে হবে। কীভাবে খাওয়াবেন?
এখানে রইল কয়েকটি টিপস-
১। শিশুদের পছন্দমতো রান্না করুন। প্রয়োজনে সবজির মধ্যে মুরগির মাংস দিয়ে দিন।
২। কয়েক রঙের সবজি রান্না করুন। একটু কর্নফ্লাওয়ার আর ডিম দিন।
৩। সবজি দিয়ে কাটলেট তৈরি করুন, বার্গারও করে দিতে পারেন।
৪। শিশুরা ঝাল খেতে পারে না। তাই রান্নার পরে সবজিতে হালকা চিনি মিশিয়ে দিন।
৫। সবজি কেনার সময় খেয়াল করতে হবে, এগুলো যেন তরতাজা থাকে।
৬। রান্নার সময় খেয়াল রাখতে হবে, সবজি কেনার পর যত দ্রুত সম্ভব রান্না করতে হবে।
৭। সবজি ধোয়ার জন্য বেশি সময় পানিতে ভিজিয়ে রাখা যাবে না।
৮। শিশুকে বোঝাতে হবে যে সবজি মানেই সেটা সব সময় বিস্বাদ নয়। বাড়িতে যদি ভালো করে সেটা রান্না করা যায়, খেতে ভালোই লাগবে।
৯। যখন সবজি রান্না করা হচ্ছে তখন, কিছু দায়িত্ব আপনার শিশু সন্তানকেও দেওয়া যায়। গাজর, আলু, মটরশুটি এগুলো যদি সে ধুয়ে দেয় বা রান্নার সময় একটু খুন্তি নাড়িয়ে দেয়, তাহলে তার মনে হবে সেও অনেক কিছু করেছে। যা জিনিসটা খাওয়ার প্রতি তার আকর্ষণ বাড়াবে।
১০। ধৈর্য না হারিয়ে ধীরে ধীরে আপনার শিশু সন্তানকে সবজি খাওয়ানো অভ্যাস করতে হবে। বকুনি দিলে জিনিসটা খাওয়া নিয়ে তার মনে ভয় আর অনিচ্ছা বাড়বে বই কমবে না।
১১। একটা শিশুর জন্য বাবা মা-ই প্রথম রোল মডেল হয়। তারা যা করে শিশুরাও চেষ্টা করে তেমন করতে। সবাই একসাথে খেতে বসলে শিশু যখন দেখবে পরিবারের সবাই ফল আর সবজি খাচ্ছে তখন সেও সেতি খেতে আগ্রহী হবে। সে খেতে না চাইলে জোর করবেন না। তাহলে খাবারের প্রতি তার আগ্রহ চলে যাবে। নিয়মিত একসাথে খেতে বসুন। এক সময় সে নিজেই প্লেট থেকে খাবার তুলে নেবে।
১২। নিয়মিত খাবার খেতে উৎসাহিত করার জন্য শিশুকে ছোট ছোট পুরস্কার দিতে পারেন। যেমন পেন্সিল, বা তার পছন্দের কার্টুন স্টিকার। নিয়মিত তার লম্বা হওয়ার বিবরণ রাখুন। শিশুকে জানান সে নিয়মিত খাওয়ার ফলে বয়সের সাথে সাথে তার শারীরিক গঠন বাড়ছে।
মেনোপজের লক্ষণ ও প্রতিকারঃ-
নারীদের মেনস্ট্রুয়েশন বন্ধ হয়ে যাওয়াকে মেনোপজ বলে। জন্মের সময় মেয়েদের ওভারিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডিম্বাণু থাকে আর পিরিয়ড শুরু হওয়ার পর প্রতি মাসে ডিম্বাণু নিঃসৃত হয়। বয়স ৫০ পার হলে ওভারিতে ডিম্বাণু শেষ হয়ে যায়, ফলে মেনস্ট্রুয়েশন বন্ধ হয়ে যায়। আর এটিই হলো মেনোপজ।
মেনোপজের কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে।
#মুড স্যুয়িংঃ-মেনোপজ়ের সময় অনেক মহিলার ঘন-ঘন মুড বদল, অস্থিরতা দেখা দেয়। এই সময়ে অধিকাংশ মহিলা সামান্য কারণেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন, উত্তেজনা দেখা দেয়। এই সময়ে অনেকেই একাকিত্বে ভোগেন, হতাশা গ্রাস করে।
#অনিদ্রাঃ-মেনোপজ়ের সময় অনেক মহিলার ঘুম ঠিকমতো হয় না। বিছানায় দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকলেও সহজে আসে না। অনেকের আবার কোনও কারণ ছাড়াই বারবার ঘুম ভেঙে যায়।
#গরম অনুভূতিঃ- হঠাৎ করে গরম অনুভূব হচ্ছে, পাখা-এসি চালানোর পরেও রাতে ঘেমে যাচ্ছেন–৪৫ বছরের পর এরকমটা হলে বুঝবেন মেনোপজ়ের সময় আসতে চলেছে। ডাক্তারি ভাষায় এই অবস্থাকে ভ্যাসোমোর উপসর্গ বলে। হঠাৎ করে গরম অনুভূতি, ঘুমনোর সময় ঘেমে যাওয়া, রাতে বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া মেনোপজ়ের প্রাথমিক লক্ষণ।
#হাড়ের স্বাস্থ্যঃ-মেনোপজ়ের প্রভাব হাড়ের স্বাস্থ্যের উপরেও পড়ে। এই সময় দেহের হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে এই সময়ে অল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, যা পরোক্ষে স্নায়ুর কার্জকর্মের উপরেও প্রভাব ফেলে।
#স্নায়বিক দুর্বলতাঃ- ইস্ট্রোজেন হরমোন মস্তিষ্কের বিকাশ ও কাজকর্মের সঙ্গে সংযুক্ত। এই হরমোনের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলে তার প্রভাব মস্তিষ্ক থেকে স্নায়বিক কাজকর্মের উপর পড়ে।
#প্রতিকারের উপায়ঃ-
ব্যালেন্সড ডায়েট: ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খেতে হবে। চর্বিযুক্ত খাবার না খেয়ে হৃৎপিণ্ড ও হাড়কে সুরক্ষা দিতে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
দুশ্চিন্তা: দুশ্চিন্তা করা যাবে না। মনে রাখতে হবে এটি একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া।
ব্যায়াম: মেনোপজ কারো ৪৫ এ বা কারও ৫০/৫৫তেও হয়। এটি অনেকটা শারীরিক ফিটনেসের ওপর নির্ভর করে। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করুন। হার্টের অসুখ রোধে ধূমপান ও অ্যালকোহল পান বন্ধ করুন। এ ছাড়া মানসিকভাবে ভালো থাকতে নিজের মতো করে সময় কাটান।
#চিকিৎসা-
মেনোপজের কারণে দীর্ঘমেয়াদে নারীদের হাড়ক্ষয় ও হৃদপিণ্ডের ওপর প্রভাব পড়ে। হাড়ের সুরক্ষায় হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি দেওয়ার কথা বলেন চিকিৎসকরা। যে হরমোন ডিম্বাশয় থেকে আসে যেমন- ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরোন, সেই হরমোন দিতে হবে। যদি কারো জরায়ু থাকে তাহলে তাদের ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরোন দুটোই দিতে হবে। কারো যদি কোনো কারণে জরায়ু না থাকে তাদের শুধু ইস্ট্রোজেন দিতে হবে। যতদিন তার দরকার হয় ততদিন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হরমোনাল থেরাপি দিতে হবে।